আপনি যদি এই ৬টি জিনিস সঠিকভাবে করতে জানেন , তবে আপনি একজন আদর্শ মা-বাবা

আদর্শ বাবা-মা হওয়া অনেক বড়ো দায়িত্ব । মনে রাখবেন, আপনি যেভাবে মানুষ করবেন, তার ওপর আপনার সন্তানের সারা জীবন নির্ভর করছে। আপনার ছোটোখাটো সব আচরণের প্রভাব আপনার সন্তানের ওপর পড়বে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে, আপনার প্রতিটি ছোট্ট ক্রিয়া আপনার শিশুর জন্য বিশাল পার্থক্য করে। আপনি আপনার বাচ্চাকে মূল্যবোধ শেখান। সঠিকভাবে বাচ্চাকে মানুষ করা প্রত্যেক বাবা মায়ের জীবনে এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ । আজ আপনাদের কিছু বিষয়ের সম্পর্কে জানাবো সেগুলি আপনি করলে নিজেকে আদর্শ বাবা-মা হিসাবে ভাবতেই পারেন।

In This Article

১. বাচ্চার ঘুম

Baby sleep

Image: Shutterstock

এটি একটি কঠিন কাজ হিসাবে মনে হতে পারে, তবে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণও। ৩ মাস বয়স পর্যন্ত শিশুরা আপনার স্পর্শের উষ্ণতা পছন্দ করে। সুতরাং, শিশুকে কোলে নিয়ে আপনার স্নেহের স্পর্শে রেখে ঘুম পড়ানোর সেরা উপায়। এছাড়া সদ্যজাত শিশুকে কাপড়ে জড়িয়ে ঘুম পাড়ালে তারা আরও বেশি ঘন্টা ঘুমিয়ে থাকতে পারে । যখন বাচ্চা একটু বড়ো হতে শুরু করে তখন বাচ্চাকে অ্যাক্টিভ রেখে অর্থাৎ তাকে খেলাধুলার মধ্যে তাকে ক্লান্ত হয়ে পড়তে দিতে হবে, তবেই বাচ্চাটির ঘুম নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। এবং হ্যাঁ, এটি তার সাথে দরকার স্বাস্থ্যকর খাবার।

২. ডায়াপারের পরিবর্তন

Diaper change

Image: Shutterstock

এটি একটু অদ্ভুত শোনাতে পারে তবে মনে রাখবেন যে, একটি ভেজা বা নোংরা ডায়াপার বাচ্চাকে অস্থির করে তোলে। ফলস্বরূপ, এটি আপনার ঘুম এবং বিশ্রাম ছিনিয়ে নিতে পারে ।  এই সমস্যার সমাধান কীভাবে করবেন জানুন। ডায়াপার পরিবর্তন করার সময় কোনও অবশিষ্ট ময়লা বা প্রস্রাব থাকলে আলতো করে মুছে ফেলতে ভেজা টিস্যু ব্যবহার করুন, আর ডায়াপার পরিবর্তনের সময় প্রত্যেকবারই ভেজা টিস্যু ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন । তারপর ডায়াপার র‍্যাশ ক্রিম লাগান বা পাউডার ও ব্যবহার করতে পারেন। তারপর বাচ্চাকে নতুন ডায়াপার পরান।

৩. বাচ্চার কান্না থামানো

Stop crying baby

Image: Shutterstock

বাচ্চার কান্না বাবা-মায়ের কাছে দুঃস্বপ্ন। শিশুরা বিভিন্ন কারণে কাঁদে – খিদে পাওয়া, একাকীত্ব, অসুস্থতা বা ঘুম ইত্যাদি।  আপনাকে আপনার ছোট্ট সোনার ইঙ্গিত গুলো বোঝার চেষ্টা করতে হবে। আর সেটি সম্ভব তার সঙ্গে সময় কাটালে। কখনও কখনও একটি আলিঙ্গন, একটি নরম চুম্বন, পিছনে বা মাথায় হাত বোলানো তার কান্না থামানোর জন্য যথেষ্ট।

৪. বাচ্চার সব প্রশ্নকে গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করুন

importance to all the questions of the child

Image: Shutterstock

আপনার বাচ্চা বড়ো হতে শুরু করলে ,আপনাকে নানা ধরণের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে । তবে, বাচ্চা যদি আপনাকে বিশ্বাস করে তবে আপনাকে বারবার এক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে বিরক্ত করবে না। পরিবর্তে, এটি তাদের কৌতূহল মন যা আপনার প্রতিটি ক্রিয়ার সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করতে  । ধৈর্য ধরুন এবং তাদের প্রশ্নের যৌক্তিকভাবে জবাব দিন কারণ এটি তাদের চারপাশের বিশ্ব সম্পর্কে তাদের ধারণাটি গঠনে সহায়তা করে।

৫. বাচ্চাকে খাবার খাওয়ার জন্য রাজি করানো

Persuading the child to eat

Image: Shutterstock

বাবা মায়ের জন্য আর একটি কঠিন কাজ হল তাদের সন্তানকে খাবার খাওয়ার জন্য রাজি করানো। বাচ্চারা বড়ো হতে শুরু করলে বিভিন্ন ধরণের স্বাদগুলি চিনতে শুরু করে এবং প্রায়শই জাঙ্ক ফুডের দিকে ঝুঁকতে থাকে। আপনার বাচ্চা কেন নির্দিষ্ট জাঙ্ক ফুড পছন্দ করে তা খুঁজে বার করুন এবং আপনার নিয়মিত খাবারে এর স্বাদ যুক্ত করার চেষ্টা করুন। এর জন্য খাদ্যে পুষ্টির পরিমাণ যেন ঠিক থাকে। আর দেখতেও যেন ভালো হয়, তবে বাচ্চারা খেতেও ইচ্ছাপ্রকাশ করবে । বাচ্চারা প্রায়শই বাড়ির বড়োদের অনুকরণ করে। সুতরাং, আপনি বাচ্চার সাথে খাবার খান এবং তাদের প্রভাবিত করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস করুন।

৬. নিয়মানুবর্তিতা শেখান

Teach discipline

Image: Shutterstock

বেশিরভাগ বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করার সময় তাদের মারধর করে। এর একমাত্র অর্থ হল আপনি আপনার সন্তানের সাথে কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে অক্ষম। যখনই আপনার শিশু কোনও খারাপ আচরণের শিকার হয়, তখনই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন যে এই নির্দিষ্ট আচরণটি কেন গ্রহণযোগ্য নয় । যুক্তি দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন, তবে আপনার বাচ্চার বয়েসের কথা মাথায় রেখে। তবে এক্ষেত্রে আপনি ও আপনার সঙ্গী যেন একইভাবে আপনাদের বাচ্চাকে নিয়মানুবর্তিতা শেখানোর পদ্ধতি অবলম্বন করেন।

সন্তান লালনপালন করা সহজ জিনিস নয়। তবে ধারাবাহিকতা মূল বিষয়। এবং, অবশ্যই এর পাশাপাশি ভালোবাসা এবং যত্নও প্রয়োজন।

Was this article helpful?
thumbsupthumbsdown
The following two tabs change content below.