যে পাঁচটি ভুল আপনি ছেলে ও মেয়ে সন্তান একসঙ্গে মানুষ করার সময় করে থাকেন

বাচ্চাদের মানুষ করার সময় কিছু বাবা-মা ছেলে ও মেয়েদের আলাদাভাবে লালন-পালন করার পদ্ধতি অবলম্বন করেন। একসঙ্গে দুজনকে মানুষ করার ক্ষেত্রে অনেকসময় হয় যে আপনি মেয়ের সঙ্গে একটু নরমভাবে মিশছেন। আপনি নিজের ব্যবহারের মাধ্যমেই তাকে বুঝিয়ে দেন স্পষ্টভাবে যে মেয়েরা সংবেদনশীল। আপনি অজান্তেই তাদের জন্য একটি নরম জায়গা তৈরী করেন। তাই বলে ব্যাপারটা এইরকম নয় যে আপনি ছেলেকে কম ভালোবাসেন বা কম স্নেহ করেন, তবে আপনি আপনার ছেলের প্রতি আপনার আবেগকে কম প্রকাশ করে থাকেন ।

In This Article

১. আপনি প্রথম থেকেই আপনার ছেলের প্রতি কঠোর

আপনি আপনার ছেলেকে কাঁদতে বারণ করে থাকেন। তবে একই জিনিস আপনার মেয়ের ক্ষেত্রে আপনি করেন না, সে যদি একাধিকবার কাঁদেও আপনি ভাবেন যে মেয়েরা তো আবেগপ্রবণ, তাই কাঁদতেই পারে। এটি আপনার মেয়ের জন্য খারাপ, এতে আপনার মেয়ে মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে যেতে পারে ! তাই আপনার উচিত তার মনে এমন একটি জায়গা বানানো যেখানে সে তার অনুভূতি ও আবেগ প্রকাশ করতে পারে।

২. আপনি আপনার ছেলেকে আরও পুরুষালী বা ম্যানলি হতে উৎসাহিত করেন

আমাদের সমাজ এমনই যে একটি ছেলেকে পুরুষালী বা ম্যানলি হতে বাধ্য করে। বাস্তবে, আপনার ছোট্ট ছেলেটি যেমন আপনার ছোট্ট মেয়েটির মতোই সংবেদনশীল, তা কেউ বোঝে না। মনে রাখবেন , তার অনুভূতিগুলি যাতে তার বোঝা না হয় সেটা দেখা আপনারই দায়িত্ব । অর্থাৎ সে যেন বাবা মায়ের কাছে তার সব অনুভূতি প্রকাশ করতে পারে, এটি তখনই সম্ভব যখন আপনি সমাজের চিরাচরিত ভাবনা-চিন্তা থেকে বেরিয়ে আসবেন । আপনাকে আপনার ছেলেকে একজন ভাল শ্রোতা হতে, অন্যের প্রতি সংবেদনশীল হতে এবং সবার সাথে মানিয়ে চলতে শেখাতে হবে।

৩. আপনি হয়তো সেই শব্দগুলি ব্যবহার করেন যা লিঙ্গ নির্দিষ্ট

আপনি যখন আপনার ছেলের প্রশংসা করেন, আপনি যদি নিজের ছেলের জন্য ‘স্মার্ট’ জাতীয় শব্দ ব্যবহার করেন তবে আপনার মেয়ের জন্য ‘সুন্দর’ বা ‘রাজকন্যার’ মতো শব্দ ব্যবহার করেন, তবে এই নিয়ে ভাবার সময় এসেছে। বুদ্ধি করে প্রশংসা করার জন্য শব্দ ব্যবহার করুন। ‘স্মার্ট’, ‘উজ্জ্বল,’ ’বুদ্ধিমান,’  এমন কিছু শব্দ যা আপনার ছেলে ও মেয়ে উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে । এইভাবেই আপনি তাদের দুজনকেই একইভাবে আত্মবিশ্বাস তৈরিতে সহায়তা করতে পারেন।

৪. আপনি আপনার ছেলের চেয়ে আপনার কন্যার প্রতি বেশি সংরক্ষণশীল

এটা সত্যি যে মেয়েরা শারীরিকভাবে ছেলেদের মতো শক্তিশালী নয়। তবে, শারীরিক শক্তি ছাড়াও মানসিক শক্তিও গুরুত্বপূর্ণ। সমাজে এগিয়ে যাওয়ার জন্য তারা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে তার জন্য আপনাকে অবশ্যই তাদের দুজনকেই প্রস্তুত করতে হবে। মেয়ের প্রতি বেশি সংরক্ষণশীল হয়ে তাকে সমস্যা থেকে দূরে কখনোই রাখবেন না।

৫. আপনি আপনার ছেলেকে হয়তো জীবনের পাঠ পড়াতে বেশি উদ্যোগী হন

এখন কেবল পুরুষরা পরিবারের একমাত্র রোজগারী এমন নয়, অনেকদিনই এই ব্যাপারটির পরিবর্তন হয়েছে । বড় হওয়ার সময় আপনার ছেলের পাশাপাশি মেয়েকেও জীবনের নানা গুরুত্বপূর্ণ পাঠ পড়াবেন, দুজনের ক্ষেত্রে ভেদাভেদ করবেন না । এখন বলাই বাহুল্য যে একটি সংসারে মহিলারা সমান সমান দায়িত্ব ভাগ করে নেয় স্বামীর সাথে। সুতরাং, ছেলে ও মেয়েকে একই ধারায় মানুষ করা উচিত তবে তারাও বড়ো হয়ে ছেলে ও মেয়ের ভেদাভেদ করবে না।

তাহলে বুঝলেন তো, বাড়িতে ছেলে ও মেয়ে সন্তান দুজনকে একসঙ্গে মানুষ করতে হলে কোন কোন দিকে নজর রাখতে হবে। মনে রাখবেন, আপনার মানুষ করার ওপরেই ওদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে।

Was this article helpful?
Like buttonDislike button
disqus_img

Community Experiences

Join the conversation and become a part of our nurturing community! Share your stories, experiences, and insights to connect with fellow parents.