কিভাবে দ্রুত গর্ভবতী হবেন ? জানুন

check_icon Research-backed

বেশ অনেকদিন সুখের দাম্পত্য কাটিয়ে এবার কি আপনি গর্ভবতী হতে চান ? তাহলে এ বিষয়ে আপনার সঠিক ধারণা থাকা প্রয়োজন। এই প্রবন্ধে আমরা জানাবো কিভাবে আপনার গর্ভধারণের প্রক্রিয়া সহজ ও দ্রুত হবে।

প্রথমেই জেনেনি, যে কোন কোন বিষয় আপনার গর্ভবতী হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

In This Article

আপনার কনসিভ করার সম্ভাবনা যেসব বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়

গর্ভধারণের সম্ভাবনা পুরুষ বা মহিলার বন্ধ্যাত্ব সহ বিভিন্ন কারণে বিলম্বিত হতে পারে। নিচে  কয়েকটি কারণ উল্লেখ করে হল (1)

মহিলাদের ক্ষেত্রে :

  • প্রসূতির বয়স ৩০ পেরিয়ে গেলে
  • জরায়ুতে ফাইব্রয়েড থাকলে
  • এন্ডোমেট্রিওসিস
  • এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি
  • পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (পিসিওএস)
  • এসটিডি (যৌন রোগ) এর ইতিহাস
  • ফ্যালোপিয়ান টিউব বন্ধ
  • অনিয়মিত পিরিয়ড
  • থাইরয়েডের মাত্রার তারতম্য  (2)
  • প্রিম্যাচিওর ওভারিয়ান ফেলিয়ার (POF) (3)

পুরুষদের ক্ষেত্রে :

  • শুক্রাণুর সংখ্যা কম
  • অনাবৃত অণ্ডকোষ
  • ইরেক্টাইল ডিসফংশন (4)
  • অকাল বীর্যপাত ((5))
  • ডায়াবেটিস।

অন্যান্য কারণ :

  • তলপেটে অপারেশন
  • লাইফস্টাইল সংক্রান্ত সমস্যা

উপরে উল্লেখিত শারীরিক সমস্যাগুলির সম্মুখীন যদি না হন, তার মানে আপনাকে কনসিভ করার ক্ষেত্রে আর একটু বেশি সময় দিতে হবে। বুঝতে হবে কোথায় ঠিক সমস্যা হচ্ছে।

affect your chances of conceiving

Image: Shutterstock

আপনার প্রেগন্যান্ট হওয়ার সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তোলার জন্য উপযুক্ত টিপস

১. চেকআপ: আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন কিনা তা নিশ্চিত হতে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য যান। আপনি ডিম্বস্ফোটন সম্পর্কিত এবং শুক্রাণু সংখ্যা পরীক্ষা করে নিতে পারেন, যা দম্পতির গর্ভধারণের ক্ষমতা নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় । এছাড়া কনসিভ করার পরিকল্পনা করলে একবার চেক আপ করিয়ে নেওয়াও ভালো , যাতে গর্ভাবস্থায় কোনো সমস্যা না দেখা দেয়।

২. শরীরের ওজন ঠিক রাখা: গর্ভধারণে মহিলার ওজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অতিরিক্ত ওজন বা কম ওজন হওয়ার জন্য  শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে যা গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনাকে বাধা দিতে পারে। যোগাসন ও স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করলে শারীরিকভাবে ফিট থাকবেন, মনও ভালো থাকবে  ও আপনার শরীরের ওজনও ঠিক থাকবে।

৩. জীবনধারার পরিবর্তন: একটি স্বাস্থ্যকর লাইফস্টাইল আপনার ফার্টিলিটি বাড়াতে সহায়তা করতে পারে।  অ্যালকোহল পান, ধূমপান, গর্ভনিরোধক ওষুধ সেবন করবেন না, কারণ এগুলি আপনার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনাকে কমিয়ে দিতে পারে।

জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলুন এবং আপনার ডায়েটে ফল, মাংস, মাছ এবং দুগ্ধজাত খাবার রাখুন। এছাড়া, আপনার শরীরের ওজন ঠিক রাখতে নিয়মিত শরীরচর্চা করুন, এ বিষয়ে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন।

৪. ওভুলেশন বা ডিম্বস্ফোটনের সময়কাল পর্যবেক্ষণ : গর্ভধারণের জন্য সহবাসের সঠিক সময় জানতে আপনার ডিম্বস্ফোটনের সময়কে নির্ধারণ করুন। উদাহরণস্বরূপ, আপনার যদি ২৮দিনের ঋতুচক্র হয় তবে আপনার ১৪ দিনের দিন ডিম্বস্ফোটন হবে (6)। সুতরাং, পিরিয়ড হওয়ার ​দশম দিন থেকে আঠারোতম দিন পর্যন্ত যৌন মিলনের জন্য আদর্শ । এই সময়টি ফার্টাইল উইন্ডো (Fertile Window) নামে পরিচত । তবে এ ব্যাপারে আপনি অবশ্যই স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের থেকে পরামর্শ নিয়ে নেবেন।

Appropriate tips to increase your chances

Image: Shutterstock

৫. ফলিকুলার মনিটরিং: আপনি যদি নিজে থেকে ওভুলেশনের সময় নির্ধারণ করতে না  পারেন তবে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যান। তিনি আপনাকে ফলিকুলার পর্যবেক্ষণে সহায়তা করতে পারেন। রক্তের হরমোন পরীক্ষা এবং আল্ট্রাসাউন্ডের সাহায্যে তারা ডিম্বস্ফোটনের সঠিক সময় তিনি বলে দিতে পারবেন।

৬. ফার্টিলিটি বাড়ানোর উপযুক্ত খাবার: ফার্টিলিটি বৃদ্ধির জন্য ফলিক অ্যাসিড, ভিটামিন সি, এ, ডি, ই, জিঙ্ক এবং পটাসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারের প্রয়োজন। এইসব পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার মহিলাদের ক্ষেত্রে ডিম্বাণুর এবং অপরদিকে পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণুর গুণমান উন্নত করতে সহায়তা করে।

এই সময় যেসব খাবার খাওয়া উচিত তা নিচে উল্লেখ করা হল (7)

  • সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাক, বাঁধাকপি
  • তৈলাক্ত মাছ
  •  জিঙ্ক সমৃদ্ধ খাবার যেমন কাজু বাদাম, আমন্ড, যেকোনো ধরনের ডাল
  • কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার যেমন ভাত, রাঙালু
  • প্রোটিন জাতীয় খাদ্য যেমন চিকেন, ডিম, দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি।

৭. কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল : কনসিভ করার পরিকল্পনা করার আগে আপনাকে কমপক্ষে চার থেকে ছয় মাস আগে গর্ভনিরোধক বড়ি অর্থাৎ কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল খাওয়া বন্ধ করতে হবে। কারণ জন্ম নিয়ন্ত্রণের বড়ি ব্যবহার বন্ধ করার পরে শরীরে স্বাভাবিক হরমোনের ভারসাম্য ফিরে পেতে কিছুটা সময় প্রয়োজন।

৮. পর্যাপ্ত পরিমান ঘুমোন : রাতে ঘুম যদি ভালো হয়, তাহলে শরীরের মেটাবলিজম ঠিক থাকে ও তার পাশাপাশি হরমোনের উৎপাদনও সঠিক পরিমাণে হয়। তাই আপনার দিনে সাত থেকে আট ঘন্টার ঘুম খুবই প্রয়োজনীয়।

৯. স্ট্রেস কমান : মহিলা ও পুরুষ উভয়ই যদি বেশি পরিমান স্ট্রেস নিয়ে ফেলেন, তাহলে শরীরে হরমোনের তারতম্য ঘটে এবং যা দুজনেরই ফার্টিলিটিকে প্রভাবিত করে। তাই স্ট্রেস থেকে মুক্তি পেতে নিয়মিত যোগাসন করুন।

১০. পুরুষদের ওজন নিয়ন্ত্রণ : বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুরুষদের যদি ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হয় তাহলে তার স্পার্ম কাউন্ট কম হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে, শরীরে হরমোনের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে এবং আপনার গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যাবে। তাই গর্ভধারণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে তুলতে মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষদেরও নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা অত্যন্ত জরুরি।

কনসিভ করতে পারছেন না বলে সব আশা ছেড়ে দেবেন না। সব সমস্যারই সমাধান আছে। তাই সহজে ধৈর্য হারাবেন না। নিজের যত্ন করুন ও সুস্থ থাকুন।

References:

MomJunction's articles are written after analyzing the research works of expert authors and institutions. Our references consist of resources established by authorities in their respective fields. You can learn more about the authenticity of the information we present in our editorial policy.
  1. Risk Factors;https://resolve.org/infertility-101/what-is-infertility/risk-factors/
  2. Pregnancy and Fertility in Thyroid Disorders;https://www.btf-thyroid.org/pregnancy-and-fertility-in-thyroid-disorders
  3. Premature Ovarian Failure;https://resolve.org/infertility-101/medical-conditions/premature-ovarian-failure/
  4. Erectile Dysfunction;https://maleinfertility.org/sexual-medicine/erectile-dysfunction-ed
  5. Premature Ejaculation;https://fertilitypedia.org/edu/diagnoses/premature-ejaculation
  6. The timing of the “fertile window” in the menstrual cycle: day specific estimates from a prospective study;https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pmc/articles/PMC27529/
  7. Five superfoods to boost your fertility;https://www.nutritionist-resource.org.uk/memberarticles/five-super-foods-to-boost-your-fertility
Was this article helpful?
thumbsupthumbsdown
The following two tabs change content below.