
Image: Shutterstock
প্রত্যেক গর্ভবতী মহিলাই তার গর্ভস্থ শিশুর সম্পর্কে জানতে খুবই আগ্রহী হন। তেমনি নিজের শরীরে কি কি পরিবর্তন হতে চলেছে, সেই সম্পর্কে অবগত হওয়ায় উচিত। আপনি আপনার গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে আপনার পেটের পরিবর্তনগুলি ভালোভাবে লক্ষ্য করতে শুরু করবেন। আপনি কি জানেন যে আপনার গর্ভস্থ বাচ্চা প্রথমে একটি ক্ষুদ্র বলের মতো আকারের হয়? আর তার নয় মাস পর সেই আপনার কোল আলো করে আসে।

গর্ভাবস্থায় শরীরে সাপ্তাহিক কী কী পরিবর্তন হয় পড়তে থাকুন।
সপ্তাহ ১ থেকে সপ্তাহ ৪
এই সময় পেটের আকারের কোনো পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় না। কারণ আপনার গর্ভস্থ শিশু মাত্র ২ মিমি লম্বা হয়।
সপ্তাহ ৫
প্রেগন্যান্সির পঞ্চম সপ্তাহ থেকে আপনার গর্ভস্থ ভ্রুণের হৃদস্পন্দন শুরু হয়। আপনি এটি এখন শুনতে সক্ষম হবেন না সেরকম তবে আপনি যখন আল্ট্রাসাউন্ড করতে যাবেন তখন তার নড়াচড়া দেখতে পেতেই পারেন। এইসময় ভ্রুণে তিন ধরণের স্তর বা লেয়ার থাকে।
- স্তর ১ – বাহ্যিক একটোডার্ম, এটি ভ্রূণের স্নায়ুতন্ত্র, কান, চোখ এবং টিস্যু গঠন করে।
- স্তর ২- এন্ডোডার্ম, অভ্যন্তরীণ স্তর হিসাবে পরিচিত। এটি ভ্রূণের ফুসফুস, অন্ত্র এবং মূত্রাশয় গঠন করে।
- স্তর ৩ – মেসোডার্ম, এটি ভ্রুণের হৃদযন্ত্র গঠন করে। এই স্তরটি পরে গর্ভস্থ শিশুর হাড়, পেশী, কিডনি এবং প্রজনন অঙ্গ তৈরি করে।
সপ্তাহ ৬
আপনার গর্ভস্থ বাচ্চা এই সময়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়, সেটি আপনি নিজেও হয়তো বুঝতে পারবেন। নিয়মিত হৃদস্পন্দন শুরু হবে। এছাড়াও, আপনার শিশুর মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটবে।
সপ্তাহ ৭
এই সময় আপনার গর্ভস্থ শিশুর চোখ ও নাক বাদে মুখের নানা বৈশিষ্ট্যগুলি বিকাশ হওয়া শুরু করে । ক্রমবর্ধমান স্নায়ু কোষগুলির জন্য মস্তিষ্ক জটিল হয়ে উঠতে থাকে । এবং, শিশুটি ধীরে ধীরে নড়াচড়া শুরু করে, কিন্তু এই সময় হয়তো আপনি তা বুঝতে পারবেন না।
সপ্তাহ ৮ থেকে ৯
এই দুই সপ্তাহের মধ্যে শিশুর কান ও ঠোঁটের উপরের অংশের বিকাশ ঘটে। অন্যান্য কিছু অঙ্গের পাশাপাশি আঙুলের ডগার গঠন শুরু হয়। এই সময় থেকে আপনার আগের জামা হালকা আঁটসাঁট হতে শুরু করবে।
Image: Image: Shutterstock
সপ্তাহ ১০
এখন আপনার শিশুটিকে একটি ভ্রূণ বলা যেতে পারে ! হাতের আঙুল এবং পায়ের আঙুলগুলি বিকশিত হয়, হাড় শক্ত হয় এবং কিডনি প্রস্রাব তৈরী করতে শুরু করে। এটি কার্যত ভ্রূণের পর্যায়ের শেষ যেখানে শিশুটি অনেক কম বিপদের মধ্যে থাকে।
সপ্তাহ ১১ থেকে ১২
ভ্রূণ এই সময়ে ফুসফুসের বিকাশে সহায়তা করার জন্য অ্যামনিওটিক তরল দ্বারা শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে শুরু করে। ১০তম এবং ১১তম সপ্তাহে, ভ্রূণ অল্প পরিমাণে অ্যামনিয়োটিক তরলের সাহায্যে শ্বাস নিতে এবং শ্বাস ছাড়তে শুরু করে, যা আপনার শিশুর ফুসফুসকে বৃদ্ধি এবং বিকাশ ঘটতে সহায়তা করে। গর্ভস্থ শিশু সদ্য গঠন হওয়া হাতের আঙুল খোলা বন্ধ করতে সক্ষম হয় ।
সপ্তাহ ১৩ থেকে ১৫
মূত্রথলি এবং ডিম্বাশয়ের পাশাপাশি সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গঠন হতে শুরু করে । এছাড়াও, শিশুটি মুখের ভাব প্রকাশ করতে শুরু করে।
Image: Image: Shutterstock
সপ্তাহ ১৬ থেকে ১৮
হাড় শক্ত হতে শুরু করে এবং অঙ্গগুলি বাড়তে শুরু করে। এই সময় থেকেই আপনার গর্ভস্থ শিশু মায়ের দেহের অভ্যন্তরে এবং বাইরের শব্দ শুনতে পায় । তাই গান করুন, হাসুন ও আপনার ছোট্ট সোনার সাথে কথা বলুন ! সবই কিন্তু ও শুনতে পাচ্ছে।
সপ্তাহ ১৯ থেকে ২৩
ধীরে ধীরে র হৃদযন্ত্র পরিণত রূপে প্রকাশ পেতে থাকে । এই সময়ে আপনার গর্ভস্থ শিশুর হাত-পা ছোঁড়া বা যে কোনো রকম নড়াচড়া আপনি ভালোভাবেই অনুভব করতে শুরু করবেন। কি অনুভব করছেন তো ?
সপ্তাহ ২৪
আপনার শিশুর স্বাদ করোক কোষগুলির বিকাশ ঘটে ও চুল বাড়তে থাকে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিকভাবে নিতে শুরু করে । এটি দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শেষ। আপনার ছোট্টেটি তো এখন চোখ খুলতে পারে!
Image: Image: Shutterstock
চলুন গর্ভাবস্থার ২৮ সপ্তাহ থেকে শেষ দিকে এগিয়ে যাওয়া যাক। আপনার বাচ্চা এখন স্বপ্ন দেখতে পারে! জানেন কি তা ? দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হয় এবং চোখের পাতা বাড়তে শুরু করে। প্রায় ৩২ সপ্তাহের মধ্যে আপনার বাচ্চার নখ গঠিত হয়ে যায় । ৩৭ সপ্তাহে আপনার শিশুটির পুরোপুরিভাবে বিকাশ ঘটে। ফুসফুস কার্যকরী হয় এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সে বাইরে আসতে প্রস্তুত। অবশেষে ৪০তম সপ্তাহে, আপনার আনন্দের মুহূর্তটি উপস্থিত। সে এখন নিজের মা ও বাবার সাথে দেখা করতে পুরো প্রস্তুত !
ভুলে যাবেন না, শেষের সপ্তাহগুলিতে আপনার পেট আরও বাড়বে। আপনার পেটের যে পরিবর্তনগুলি ঘটছে তা লক্ষ্য করতে ভুলবেন না যেন , কারণ সেগুলিও লক্ষণীয় এবং অবিশ্বাস্য।
Community Experiences
Join the conversation and become a part of our nurturing community! Share your stories, experiences, and insights to connect with fellow parents.
















